পুরানো সেই দিনের কথা
——-An Online Magazine
স্কুলের দিনের গল্প মানেই শৈশবের এক অমূল্য স্মৃতি। সেই সকালে ঘুম থেকে উঠে ইউনিফর্ম পরে, বইয়ের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যাওয়া, বন্ধুরা মিলে ক্লাসের বেঞ্চে বসে গল্প করা—এসবই আমাদের জীবনের অন্যতম আনন্দময় অধ্যায়। স্কুলের বন্ধুদের সাথে খেলার মাঠে ছোটাছুটি, টিফিনের সময় চিপস ভাগাভাগি করা, কিংবা ক্লাস টিচারের অগোচরে হাসাহাসি—এসব স্মৃতি যেন আজও জীবন্ত হয়ে থাকে মনে।
প্রতিদিনের রুটিন ছিল আমাদের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। ক্লাস টেস্টের জন্য পড়াশোনা না করে শিক্ষক ধমক খাওয়া, টিফিনের সময় আড়ালে গিয়ে আলু-কাবলি, ফুচকা, খাওয়া, আর কখনো কখনো স্কুল থেকে বাঁচতে ছোটখাটো অসুস্থতার অভিনয় করা, আর কখনো দুষ্টুমির জন্য পুরো ক্লাস একসাথে দাঁড়িয়ে থাকা, কখনো কখনো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করা, পরীক্ষার আগে একে অপরের খাতায় তাকানোর চেষ্টা, বা গ্রুপ স্টাডির নামে আড্ডা দেওয়া, পরীক্ষার আগে আগের রাতে পড়ার বই খুঁজে পাওয়া না পাওয়া নিয়ে উত্তেজনা, কিশোর বয়েসের প্রথম ভালো লাগার গা শির-শিরে অনুভূতি, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি তীব্র টান —এসবই ছিল স্কুল জীবনের মজার অংশ। আর ছিল শিক্ষকদের শাসন ও ভালোবাসা। কঠোর শাসনের পরও, আমাদের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা ছিল গভীর।
স্মৃতিতে ভাসে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিকনিক, আর বন্ধুদের সাথে করা ছোটখাটো দুষ্টুমিগুলো। পরের বছর আবার নতুন ক্লাসে একই বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করার সেই অনুভূতি ছিলো বড্ড মধুর। আজ এসব স্মৃতি মনে করে হাসি আসে, আবার একটা মনখারাপও হয়। প্রিয় বন্ধুদের সাথে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো আজও আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। স্কুলের দিনগুলো শুধুই পড়াশোনার জন্য নয়, বরং জীবনকে নতুনভাবে চিনতে শেখার জন্য এক অমূল্য সময়।
এই ওয়েব পেজ টি তৈরী করা হয়েছে সেই চির রঙিন সোনার দিনের স্মৃতি গুলোকে ধরে রাখার জন্য।
আসুন কালের খাতায় লিখে রাখুন আপনার স্কুল জীবনের সেই চির স্মরণীয় দিনগুলিকে। ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য।
একটি পুরো গল্প বা কবিতা একটি সিঙ্গেল কমেন্টের মধ্যে লিখুন (অথবা কপি পেস্ট ) করুন।
Old school stories capture the essence of childhood—full of laughter, mischief, and learning. From classroom pranks to unforgettable teachers and lifelong friendships, these memories remain timeless. Every hallway and playground holds a special tale, reminding us of the simple joys and valuable lessons that shaped our younger years. In this page we are trying to record the stories written by the alumni of THS related to the school and this small town. We request to post the complete story into a single comment.
আমার স্কুল “কিছু স্মৃতি, কিছু কথা।”
ডা: বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়
———-
সাল ১৯৭৪, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হয়ে তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে আমার প্রবেশ।
না তখন এত্ত বড় বাড়ি ছিল না। চারিদিক বেশ খোলামেলা ছিল। ইস্কুল মাঠের চারপাশে কোন পাঁচিল ছিল না।
মাঠের পূর্ব দিকের ধার বরাবর কাঁচা নর্দমা ছিল।
তারকেশ্বরে তখন আলাদা করে বালিকা বিদ্যালয় তৈরি হয়নি। রোজদিন সকালে আমাদের ইস্কুলেই বালিকা বিদ্যালয় চালু ছিল।
আমরা বলতাম মেয়েদের স্কুল। সকালে ওই স্কুলের পাঠ শেষ হলে আমাদের স্কুল চালু হত।
স্কুলের পুবদিক আর পশ্চিম দিক বরাবর একতলা সার দেওয়া ঘর। টিনের শেড লম্বা করিডোর বারন্দা। উত্তর থেকে দক্ষিণে চলে গেছে।
একটা টেপা কল ছিল পুবের বারন্দা পেরিয়ে দক্ষিণ প্রান্তে।
মাঝে ছিল চাতাল।
উত্তরে ছিল পুরোন খিলানে হেড স্যারের ঘর।তার বাঁদিকে স্যারেদের কমন রুম। ডানদিকে অফিস ঘর। পুরোটাই একতলা।
একটা পেটা ঘন্টা হেডস্যারের ঘরের সামনের বারন্দায় ঝোলান থাকত।
পশ্চিম দিকে বোডিং। তার উত্তর দিকে কয়েকজন স্যার থাকতেন।
দক্ষিণ দিকে ছিল হেড স্যারের কোয়ার্টার।
বোর্ডিং আর স্কুল বাড়ির মাঝে একফালি জায়গা ছিল। পুরোন ইঁট, বুনো গাছ সব সময় হয়েই থাকত। ওরই মাঠের দিকে একটা ভাঙ্গা টিনের দরজা ছিল।
এই একতলা স্কুল বাড়ির নীচের ঘরগুলোর কয়েকটাতে বেশ কটা জানলা ভাঙ্গা থাকত। তার হদিশ শুধু আমরাই জানতাম।
সেই জানলা গলে ক্ষ্যাপাদার দোকানে যাওয়া আসা খুব সহজ ছিল। তখন ক্ষ্যাপাদার বাবা টিনের শেডের নীচে বসে নানারকমের লজেন্স খাওয়াতো।
মেয়েদের স্কুল ছুটির আগেই কেউ কেউ জানলা গলে স্কুলে ঢুকে পড়ত। ধরা পরে বড়দিদিমণির কানমলা হয়ত অনেকেই মনে আছে।
টিফিনের সময় সারা স্কুল আমরা ছুটে বেড়াতাম। মাঠেরদিকে একটা নতুন বাড়ি তৈরি হয়েছিল। তবে আমাদের ওপরে ওঠা বারণ ছিল।
ক্লাস ফাইভ এর ক্লাসঘর ছিল পুবদিকের কমনরুমের দ্বিতীয় ঘর। ক্লাস টিচার ছিলেন হারাধনবাবু।
কয়েকজন স্যার যেমন বিনয়বাবু, বঙ্কিমবাবু, করণিক বেচুবাবু আবার মেয়েদের স্কুলেও ছিলেন আবার আমাদের স্কুলেও ছিলেন। আমার ভারি মনে হত এরাঁ বোধহয় এখানেই থাকেন।
স্কুলের টিফিন সময় নতুন বাড়ির কলাপসিবল গেট খোলা হত। বাইরে ঘুঘনি, কুলেরআচার, ঝটপটি, শোনপাপড়ি, আলুকাবলি, গরমকালে ঘষা বরফ, কাঠি আইসক্রিম কত কি পাওয়া যেত। বন্ধুদের একজন কিনলেই তিন চার জন তাতে ভাগ বসাতে চলে যেতাম।
আর ছিল লটারি, শোন পাপড়ি আর আইসক্রিমের।
একটা গোল চাকতি চারপাশে পেরেক ঠোকা। একটা জিভছোলা লাগানো থাকত। কেউ যদি খেলত আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়তাম।
কিন্তু কোনদিনই কাউকে পেতে দেখিনি।
গরমকালে সকালে স্কুল হত। তখন গোটা মাঠ জুড়ে বাজার বসত। বেশ মজাই লাগত।
তখন আমার স্কুলে “শাসন ছিল “।
স্যারেদের হাতে বেত ঘোরাফেরা করত। কয়েকজন স্যারের কথা না বললেই নয়।
নগেনবাবু, বঙ্কিমবাবু, কবিরাজবাবু, হরিমোহনবাবু, অচিন্ত্যবাবু, দীপেনবাবু, এরাঁ তৎকালীন আমাদের কাছে খুব বিখ্যাত ছিলেন।
একজন ছিলেন চলাফেরা, পোষাক ও আচরণে এক ব্যতিক্রমী স্যার ভূদেব আচার্য। পায়ে কাঠের খড়ম। ধূতি, উড়নি, মাথা প্রায় নেড়া একটা বড় টিকি ছিল, তাতে গিঁট বাঁধা। তিনি কিন্তু অঙ্ক আর বিজ্ঞান পড়াতেন। কোনদিন তাঁকে চেয়ারে বসতে দেখনি।
আর বিশেষ লেগেছিল নগেনবাবুকে। “স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ” এর মতো গোঁফ। বেঁটে খাটো মানুষ। সাইকেল নিয়ে স্কুলে আসতেন। ধূতি আর পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবির পকেটে থাকত একটা দড়ি বাঁধা পকেট ঘড়ি। পড়া বলতে না পারলে নগেনবাবুর গাঁট্টা তখনকারদিনের অনেকেরই মনে আছে।
তবে বঙ্কিমবাবুর কাছে পড়া না করে গেলে তো মার খেতেই হতো। আবার যেদিন ভাল করে পড়া বলতে পারতাম তাতেও মার খেতে হতো।
তবে এই মার আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে।
একবার ক্লাস শুরুর আগে আমি আর একবন্ধু মারপিট করি, সেইসময় ক্লাসে স্যার চলে আসেন। শাস্তি ঘোষণা হলো। আমি তার দুইকান সে আমার দুইকান ধরে ওঠবোস।
বেশ সিক্রোনাইজ শাস্তি।
সেই ক্লাসের সারাক্ষণ ধরে আমাদের ওঠাবসা চলল। পরদিন জ্বর। তিনদিন স্কুল কামাই। পরদিন স্যার আমাদের বাড়িতে হাজির।
শাস্তির সাথেও এক ভালবাসা জড়িয়ে থাকত।
তখন পড়া করে স্কুলে যেতে হত। ক্লাসে রীতিমতো পড়া ধরা হত।
না পারলে কান ধরে বেঞ্চের ওপর দাঁড়ান কিংবা কান ধরে ওঠবোস। এমনকি নীলডাউন করে ক্লাসের বাইরে বার করে দিতেন।
একথা গুলো এখনকার সময়ে বড়ই বেমানান শোনাচ্ছে।
তবে কোনদিন এ বিষয়ে কোন বাড়ি থেকে অভিযোগ আসত না।
তখন বোর্ডিং এর ঘরে কয়েকজন স্যার থাকতেন। তারমধ্যে অচিন্ত্যবাবু, পরে তপনবাবু র কথা মনে পরে।পরে ভূদেববাবুও থাকতেন।
আর কয়েকজন স্যার হরিমোহনবাবু, অচিন্ত্যবাবু, নগেনবাবু, তপনবাবু টিউশন পড়াতেন।
আমিও সন্ধ্যায় হ্যারিকেন নিয়ে নগেনবাবুর কাছে পড়তে যেতাম। যাঁর হাতে অনেক মার খেয়েছি তিনিই প্রথম বোর্ডিং এর ছাতে রাতের আকাশ চিনিয়েছিলেন। চিনিয়েছিলেন কালপুরুষ, লুব্ধক, সপ্তর্ষিমন্ডল, আকাশগঙ্গা…. তাঁর কাছেই প্রথম নক্ষত্রজগতে গ্রীক দেবতা ও দেবীদের কথা শুনি।
এমন কতদিন গেছে পড়তে গেছি পড়া হয়নি শুধু গল্প হয়েছে…. আর তা হয়েছিল বলেই আজ আমিও বলতে পারছি। হয়ত বইয়ের পড়ার থেকে অনেক বেশিই সেদিন পড়েছিলাম।
আমাদের স্কুলে তখন ‘ শিক্ষক দিবস ‘ এখনকার মতন পালিত হতো না।
তখন বোধহয় এত জ্ঞান গম্যিও আমাদের ছিল না। তবে গরমের ছুটি পড়ার দিন একটা বেশ হৈ হৈ ব্যাপার হতো। যে যার নিজেদের ক্লাসরুমটাকে টেবিলটাকে সবাইমিলে যত্ন করে সাজাত।
পাশে বাবার বাগান ছিল। ওখানে আর রাসমঞ্চ মাঠে বেশকয়েকটা বকুল গাছ ছিল। দল বেঁধে বকুল ফুল কুড়িয়ে তার সাথে কৃষ্ণ চূড়া মিলে সাজানো হত। বাবার বাগান থেকে কখন গন্ধরাজ, গোলাপ, নাগকেশর ফুল চুরি করে আনা হত।
সেইদিন স্যারেরা খাওয়াতেন। কখনও নিজেরা চাঁদা তুলে স্যারেদের জন্য কিছু মিষ্টি কিনে এনে নিজেরাই খেয়ে নিতাম।
আমাদের স্কুলে সেই সময় কয়েকজন অশিক্ষক কর্মী ছিলেন যাদের প্রচ্ছন্ন শাসন আমাদের ঘিরে থাকত। লক্ষীদা, মথুরদা, শ্যামাদা, শিবুদা আমাদের সাথে অবিচ্ছেদ্য ছিলেন।
এই স্কুল আমাদের নম্র হতে শিখিয়েছে। নত হতে শিখিয়েছে। দৃঢ় হতে শিখিয়েছে। সম্মান দিতে শিখিয়েছে। ভালবাসতে শিখিয়েছে। একসাথে বাঁচতে শিখিয়েছে। ভাগ করে খেতে শিখিয়েছে।
*ছেলেবেলা *
জীবন তুমি আমায় বল,
ছোট বেলার আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
জীবন তুমি আমায় বল,
নানা রঙের দিনগুলো সব-
কোথায় চলে গেল?
বোশেখ রাতে ঝড়ের শেষে,
বাগানেতে ভোরেরবেলা,
আম কুড়োবার পালা;
কাঁচা আম খাওয়ার পরে,
কুশি কুশি কার মাসী খেলা-
কোথায় চলে গেল?
গরমকালে খেলার মাঠে,
বিকালবেলায় দখিন হাওয়ায়,
নানা রকম মজার খেলায়,
পুকুর ঘাটে দুপুর বেলায়
সাঁতার কাটার আনন্দ আজ-
কোথায় চলেগেল?
আষাঢ় মাসে রথের মেলায়,
জিলিপি আর জিভে গজায়,
গরম গরম পাঁপড় ভাজায়,
জগন্নাথের রশি টানায়,
হুড়োহুড়ির আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
শারদীয়ায় মেঘের ভেলায়,
কাশের বনে হওয়ার দোলায়,
দুর্গা পুজোয় নতুন জমায়,
ঢাকের বাদ্যি ধূপ আর ধূনায়,
ঠাকুর দেখার আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
মাঘে সরস্বতী পূজার দিনে,
পুষ্পাঞ্জলী দিয়ে মায়ের চরণে,
বাগানেতে গিয়ে ছুটে,
কুল গাছেতে লাফিয়ে ওঠে,
কুল খাওয়ার আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
শীতের সময় নানা মেলায়,
সার্কাসে আর নাগরদোলায়,
ছাদে উঠে মিষ্টি রোদে,
আকাশেতে ঘুড়ির খেলায়,
কাটাকাটির আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
ফাগুনেতে হোলির দিনে,
রং আবিরে রাঙিয়ে মনে,
বন্ধু পরিজনের কাছে,
শরীরটাকে ভূতের সাজে,
দোল খেলার আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
মাঠে মাঠে ছুটে ছুটে,
গাছে গাছে উঠে উঠে,
ইস্কুলেতে টিফিন বেলায়,
লুকোচুরির সেই যে খেলায়,
সেসব দিনের আনন্দ আজ-
কোথায় চলে গেল?
জানি চিরশত্রু ‘সময়’
তাদের করেছে ‘ হরণ’,
এই ‘হরণ’ থামবে সেদিন,
যেদিন আসবে ওই ‘মরণ’-
মাঝে মাঝে ভাবি আমি,
উদাস হয়ে আনমনে-
ফিরে যদি পেতাম সেদিন,
আর একটিবার এই জীবনে!
হারিয়ে আমি যেতাম তখন,
অতীত সেসব দিনের মাঝে,
আবার যাতে ফিরতে না হয়,
এই বর্তমানের কাছে-
সুবিনয় কারফা ©ধূমকেতু
আমার শহর তারকেশ্বর
কলমে শুভ্রা চক্রবর্ত্তী।
ছোট থেকে দেখছি প্রতি শ্রাবণী মেলায় মানুষের ভিড়। পরম শ্রদ্ধায় তারকনাথের মন্দিরে নতশির হয়। শহরময় কলরব, উৎসব, কোলাহল, ব্যস্ততা। এসবের কেন্দ্র যিনি তিনি নির্বিকার। যুগ যুগ ধরে কোন কলরব তার মৌন শান্তভাব ভঙ্গ করতে পারেনি। রাজবাড়ির ভিতরে শিউলি ও বেলগাছের ছায়ায় লক্ষীনারায়ণ জিউ এর ও আদি শঙ্করাচার্যের মন্দিরে এরমই পরম শান্তি বিরাজ করে। সর্বত্র বিরাজমান ঈশ্বের অস্তিত্বের প্রকাশ এই দুটো মন্দিরে আমি বিশেষ ভাবে অনুভব করেছি। সারাবছর তারকনাথ মন্দিরে সন্ধ্যা আরতির পর যখন হরিনাম সংকীর্তন হয় মনে হয় যেন পরম আনন্দ বিরাজ করে… যেন ঈশ্বরের করুণা ও পরম মমতা কান দিয়ে হৃদয়ে পৌঁছে তা পমনে পড়ে ছোটবেলার কথা। আমাদের আদিবাড়িটা মন্দিরের খুব কাছে। ভোরবেলায় বাবার মন্দিরের গেট খোলার আগেই ঠাকুমার হাত ধরে মন্দিরের সামনে গিয়ে দাঁড়াতাম। গেট খুলতেই তাড়াতাড়ি বাবার দরজার চৌকাঠে প্রণাম করে পাশে অপেক্ষা করা… দরজা খুলবে বাবা তারকনাথের দর্শন লাভ করা। মন ভালো করা অনুভূতি। তখন ঘাটে যাবার দিকটায় মন্দিরের ছাদের কড়িকাঠে প্রচুর ঘোলা পায়রা থাকত। বিকেলের দিকটায় কোন কোনদিন ঠাকুমা আমাকে নিয়ে রাজবাড়ির ভিতরে মন্দিরের চাতালটায় নিয়ে গিয়ে বসে থাকত। রাজবাড়ির খিলানের ধারে ধারে কত টিয়াপাখি আর পায়রার ভিড় লেগে থাকত। বসে বসে দেখতাম। ঠাকুমা ঠাকুর-দেবতা, রাজবাড়ি, মন্দির নিয়ে গল্প বলত, সেসব শুনে কল্পনায় বিভোর ছোটবেলা কেটেছে। ঈশ্বরে বিশ্বাসের সংসবড় হয়ে আজ যখন তারকেশ্বরের বাইরে থাকি, জন্মস্থানের প্রতি টনটনে টান আরো বেশি করে অনুভব করি। শ্রাবণীমেলার ভিড়, মন্দিরের ঐ বিশেষ অনুভূতিটা পেতে যেন ছটফট করি। তারকেশ্বরের প্রতিটা রাস্তা, বাড়ি, মানুষজন যেন পরম আত্মীয়ের মত মনে হয়। আমার জন্মস্থান চিরদিন সেরা। সেরা ছিল, আছে ও থাকবে।
Old Memory is Gold Memory
By Saumen Kumar Jana
তখন আমরা খুব সম্ভবত ক্লাস 7 বা 8 এ পড়ছি
একদিন স্কুল এ টিফিন পিরিয়ড এ আমরা সবাই একটা সিনথেটিক ফুটবল নিয়ে অর্ধেকটা ভলিবল আর অর্ধেকটা ফুটবল টাইপ এর একটা খেলা খেলছি
তখন আমাদের ক্লাস হতো অফিস বা হেডস্যার এর ঘরের ডানদিকে একটা বড় রুম এ যেটার ছাদ ছিল পুরোনো রড বেরিয়ে গিয়ে কংক্রিট খুলে গিয়ে একটা যা তা অবস্থা
তো আমাদের সবার খেলা চলছে একদম পূর্ণ এনার্জি নিয়ে
এমন সময় অঘটন
বল ছাদের রড এ লেগে একটা রড সোজা পিনাকীর মাথায়
সে তো পিনকির মাথা ফেটে গিয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড ।
আমরাও চরম লেভেল এ উত্তেজিত আমাদের ক্লাস এর ফার্স্ট বয় পিনাকী আর ওর ই মাথায় ছাদ থেকে রড পরে মাথা ফেটে গিয়ে রক্ত পড়ছে
আমরা তখন এক বন্ধু এক জান
তো আমরা সবাই মিলে স্কুল এর এগেনস্ট এ আন্দোলন করার মতো একটা ইস্যু পেয়ে গেছি
স্কুলের আবেগ ভুলে গেছি গিয়ে বন্ধুত্বের আবেগটাই প্রাধান্য দিয়ে আমরাও সেই আন্দোলনে মেতে উঠেছি যদিও পরে নিজেদের ভুলটা নিজেরাই বুঝতে পেরেছিলাম
তারপর স্যারেরা সবাই মিলে পিনাকির ট্রিটমেন্ট করালো
পিনাকি সুস্থ হয়ে স্কুলে চলে এলো
আমাদের পুরস্কার স্বরূপ আমরা পেলাম বাকি ক্লাসগুলো আমাদের ছুটি
সবাই মিলে তখন আমরা আবার মাঠে গিয়েখেলাতে মাতলাম
আবেগের নাম সাইন্স ফেয়ার
By Saumen Kumar Jana
তারকেশ্বর স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন আমরা যখন নাইন টেন বা আরো পরে যখন ইলেভেন টুয়েলভ পড়তাম আমাদের সারা বছরের একটাই সবথেকে আকর্ষিত প্রোগ্রাম ছিল সাইন্স ফেয়ার
এই সাইন্সফেয়ার করার জন্য চারদিন স্কুলটা আমাদের হাতে থাকতো আমরা সাইন্স ফেয়ার এর খরচের জন্য রাস্তাঘাটে কৌটো নিয়ে এক টাকা দু টাকা পাঁচ টাকা দশ টাকা করে চাঁদা তুলতাম। সেই টাকায় আমাদের সাইন্সফেয়ারের খরচ চলত
আর ছিল প্রচার আমরা টলিতে মাইক বেঁধে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন স্কুল কলেজের সামনে গিয়ে প্রচার করতাম। আমি প্রকাশ ভকত আমাদের রাজু শান্তনু অলক আমরা সব এভাবে প্রচার করতাম।
আর সব থেকে আকর্ষিত ব্যাপার যেটা ছিল সেটা হল অন্যান্য সারাউন্ডিং এলাকার মধ্যে যত স্কুল বা কলেজ আছে সমস্ত কলেজকে ওই ফেয়ারের জন্য ইনভিটেশন দেয়া। তো কোন স্কুলে কারা কারা যাবে সেটার জন্য প্রতিযোগিতা চলতো।
তারপর ফাইনালি যখন চার দিনের প্রোগ্রামটা শুরু হতো বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞানের উপর মডেল তৈরি করে নিয়ে আসতো এবং সেগুলো এখানে ডেমো দিত সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করত
শান্তি দা বলে একজন ছিল ও আসত ওর আরো ৪-৫ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে তারাও বিভিন্ন ধরনের মডেল নিয়ে আসতো
আমাদের সবার লিডার ছিল আমাদের সবার প্রিয় শান্তনুদা, শান্তনু মিত্র মানে আমাদের বাবু দা তারপরে আমাদের বাসবদা অনির্বাণ দা মোহন দা ও আরো যারা সিনিয়র ছিল আমাদের আমরা ছিলাম ওদের জুনিয়র ব্যাচ তো আমাদেরকে ওরা যেভাবে গাইডেন্স দিত আমরা সেই অনুযায়ী সমস্ত কাজ করার চেষ্টা করতাম
আর আমাদের সবার মধ্যে তখন একটা প্রতিযোগিতা ছিল যে কে কার থেকে বেটার কাজ করতে পারে। যার জন্য আমরা নিজেরা সব করতাম কখনো টলি চালাতাম কখনো দু টাকা কালেকশনের জন্য কৌটো হাতে রাস্তায় বের হতাম কখনো প্রচারের জন্য কোন স্কুলে যেতাম টোটাল কাজগুলোই আমরা করতাম।
কত জায়গা থেকে কত ধরনের ছাত্র-ছাত্রী আসতো কত ধরনের সাইন্টিফিক মডেল বা কুসংস্কারের এগেনস্টে কোন কিছু বা মানুষের সাধারণ জীবন যাপনে কাজে লাগে এরকম কোন কিছু
মানে সব মিলিয়ে ওই চার দিন একদম জমজমাট প্রোগ্রাম
আর ওই চার দিন আমাদের প্রিয় স্কুল আমাদের হাতে আমরাই তখন থাকতাম চারটে দিন সারাদিন সারারাত।
একদিন রাত্রে মোটার সাথে চপ মুড়ি নিয়ে আমার সে কি মারামারি, অলকেন্দু ছিল মাঝপথে তবে ও সামাল দিল
এই সব মিলিয়ে ছিল আমাদের সায়েন্স ফেয়ার
ক্রীড়াগুরু শিবপ্রসাদ ধাড়া স্মরণে
—সুব্রত কার্ফা
আমাদের সময়ে উনি প্রথম স্কুলে যোগ দেন। বাইলোজি শিক্ষক হিসেবে। শ্রীমান কৃষ্ণ ভারতী ছিলেন আমাদের প্রধান শিক্ষক। পরে পাতিয়ালা গিয়েছিলেন। তখনকার স্কুল মাঠ ছিল শসা শাঁখ আলু গরুর গাড়িতে পশ্চিম থেকে আসত, তার পাইকারি বাজার। কোনা কুনি একটি হাঁটা রাস্তা মাঠের ভিতর দিয়ে রবীন্দ্র সিনেমায় যাওয়ার পথ। হেমন্ত ,সন্ধ্যা, নাইট এর জলসা র মাঠ। বহু যাত্রা এই মাঠে আমি দেখেছি। ছোট সার্কাস ও বসেছে। একটি হাতি এই মাঠের পশ্চিম দিকে আজও পোঁতা আছে। এই মাঠ অনেক ছাত্র আন্দোলন করে ঘেরা হয়েছিল। সেই দিন আজও ভোলার নয়।এই মাঠের প্রাণ পুরুষ ছিলেন আমাদের প্রিয় মাস্টার মশাই। মাইনের কটা টাকা কাকিমার হাতে যেত তার খবর আমরা জানি। সবই তাঁর ছাত্র দের বিতরন করে দিতেন। আমার ভীষণ কাছের মানুষ ছিলেন। এত অসময়ে চলে যাওয়ায় বহু ছেলে মেয়ের জীবনে একটা সুযোগ নষ্ট হয়েছে। তাঁর একটা কথা আজ আমি সকলকে জনাব। মাস্টার মশাই আমাকে বলেছিলেন ~~~”যে কোন অনুষ্ঠানের জন্য বাঁশের গর্ত গুলি আমার বুকের উপর পোঁতা হয়” মাঠের প্রতিটি ঘাস ওনার সন্তান সম ছিল।
সবার আবেগের ‘হাই স্কুল’ তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ
সুকন্যা নন্দী (১৯৯৮)
আমাদের সবার আবেগের ‘হাই স্কুল’ তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎযাপনের সাক্ষী হতে পেরেছি এ পরম প্রাপ্তি আর সকলের মত আমারও।
এতো বড় অনুষ্ঠানের কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারিনি আমি । একটা পুজোর প্রস্তুতি নিতে না জানি কত আলোচনা থাকে , পরিকল্পনা তৈরি হয়, অর্থনৈতিক দিক টা মোটামুটি নিশ্চিত করা হয়। অবশেষে খুঁটি পুজো করে শুরু হয় প্যান্ডেলের কাজ।
আমাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০০ বছরের ‘ বিদ্যালয়ের পুজো ‘ ক্ষেত্রে এগুলো সব টা যে হয়েছে এটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি আমার। একদম কোনো দায়িত্ব পালন না করেও শুধু প্রাক্তনী হিসেবে পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই দৈবাত আমাদের শিশুবেলা থেকে খেলে বড় হওয়া স্কুল মাঠে ঢুকে পরে একটা চেয়ার টেনে বসে পরা । অবশ্যই শ্রদ্ধেয় শিব বাবুর মূর্তিকে প্রণাম করে। কোনো এক সকালে আমাদের দু’বোনকে বাবার নিকট বন্ধু ‘শিবু’ (শ্রদ্ধেয় শিবপ্রসাদধাড়া ) স্যারের কোচিং ক্লাসে দিয়ে আসা।
ওই মাঠেই ‘মুক্তিসংঘে’ র উদ্যোগে ব্রতচারী, ব্যান্ডপাটি আরো কত অনুষ্ঠান খেলা। সকাল বিকেল কেটেছে বন্ধুদের নিয়ে।
মাঠটা বোধহয় চিনতে পেরেছিল আমাকে , ভীষণ আপন করে এগিয়ে দিল সামনে। আর কুন্ঠা হলোনা।
আমাদের ব্যাচের কোনো বন্ধু নেই। পড়েছি ২ বছর এমন ঠাট্টাও শুনতে হয়েছে 😅
এতো বছর পরে হয়তো নানা অজানা ভাবনা তৈরি হয়েছিল, সবটা সরে গেল নিমেষে। একটা চেয়ার টেনে একাই বসে পড়লাম এই প্রথমবার বোধহয় কোনো বন্ধু ছাড়া। কখনো বন্ধু হলো ক্ষেপা মামা, কখনো ইমন রা, কখনো সুকৃতি দিদি,শৈবাল কে। পরে চন্দ্রনাথ দাদা। থেকে গেলাম পুরো সময় খাওয়া দাওয়া ভুলে শুধু আবেগ ভালোবাসা থেকে। ডেকে নিলাম আমার বৌদি কে এই স্কুলের প্রাক্তনী ও। একেবারে ছৌ নাচ দেখে ভীষণ আনন্দ নিয়ে বাড়ি এলাম।
পরের দিন নিজের কাজের জায়গা থেকে ট্রেন থেকে নেমে চলে গেলাম আমাদের স্কুলের অনুষ্ঠানে। এবার পেয়ে গেলাম কিছু দিদিকে যাদের স্নেহ বরাবর পাই স্কুলের দিন থেকে। রুমেলী দি, প্রিয়াদি, সোমাদি, মৌটুসী দি, মধুমিতা দি (বাবুসোনা দি ), পূর্ণিমা আর পেলাম দাদা দের অলোকেন্দু দা, সৌমেন দা, পুকাই দা, বাবুদা, মোটা দা, সবার স্নেহ আপ্লুত করলো। পরে মিলন, সুরজিৎ কোলে, কৌশিক,অতনু, সুশীল, বোন কণিকা, বন্ধু মৌসুমী,সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমরা কিছুক্ষনের জন্য হলেও এক হলাম।
শ্রদ্ধেয় স্বপন ভারতী বাবুর লেখার বাকিটা জানার আগ্রহ টেনে নিয়ে গেল আমাকেও। চললাম রুমেলী দির সঙ্গে আমিও স্যার নিয়ে গেলেন আজকের স্টাফ রুমের সামনে। কথা হলো, খোঁজ খবর পরিচয় জেনে শ্রদ্ধেয় দিলীপ বাবু স্যার সঙ্গে তাঁর লেখা পড়ে শোনালেন আমাদের। মুগ্ধ হলাম। স্যারের লেখার শেষের দুটো লাইন যে আমাদের সবার কথা। রেনুপদ বাবুর স্নেহ পাই আজও। স্কুলের মধ্যে স্যার কে পেয়ে আরো ভালো লাগলো। খুব মনে পড়লো সংস্কৃতের বিনয় বাবু কে। যিনি চাকরী জীবন থেকে অবসর নেবার পরেও টিফিনের পরের সপ্তাহে দুদিন ক্লাস নিতে আসতেন। তারক বাবু, ভদ্রেশ্বর বাবু, অচিন্ত্য বাবু, দীপেনবাবু, কার্ত্তিক বাবু, তাপস বাবু, মদন বাবু, গোরা বাবু, অশোক বাবু, হিমাশু বাবু, রামবাবু, লাইব্রেরি র তপন বাবু, সাদা লালপাড় শাড়ি পড়ে আমরা প্রার্থনার লাইনে। সামনে দিবাকর বাবু রা। ইরা দিদিমনি ছিলেন। নাম ভুল হলে ক্ষমা করবেন 🙏 বন্ধুদের মুখ থেকে শোনা।
আর পেয়েছি শ্যামাদা, মথুরদা কে। খুব মনে পড়ে ভেঙে পরা স্কুলের সামনে টা আজ যেটা প্রবেশপথ।
সব স্যারের নাম বলতে পারলাম না। সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আভূমি প্রনাম। যাঁরা আছেন সুস্থ্য থাকুন
ভালো থাকুন।
৪ তারিখ শনিবার ট্রেন থেকে অন্য প্লাটফর্ম দেখলাম আমাদের পার্থদা। বুঝলাম ঠিক স্কুলে যাবে। দাঁড়িয়ে রইলাম, একসঙ্গে দুই দাদা বোন মিলে ঢুকলাম স্কুলে। মনটা একটু খারাপ লাগছিল কবি জয় গোস্বামীর পর্বের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেছে তখন মুঠো ফোনে অনলাইনে দেখেছি। যাক পার্থদা কে তো পেলাম। গিয়ে দেখি পার্থদা খুঁজছে চারপাশে কত কিছু।
চোখ চক চক করছে আনন্দে।
স্মৃতিচারণ তো অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে এবার সুতো গোটানোই ভালো।
অনেক দিন পরে প্রিয় লোপামুদ্রা মিত্রর গান মুগ্ধ হয়ে শুনলাম।
* কত গুণী কৃতি মানুষের সানিধ্যে এলাম।
প্রাক্তনী দাদাদের নাটক দেখে মন ভরে গেল।
বাকি প্রাক্তনী দের সব অনুষ্ঠান দেখে আপ্লুত হয়েছি।
সোমনাথ, এমিলি, অর্কদের গান, কৃষ্ণদাসের বাঁশি, আর সবার কবিতা।
** সব বয়সের প্রাক্তনী রা শিখিয়ে গেলেন জীবনে প্রথম, দ্বিতীয় না হয়েও একটা লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে স্বপ্ন দেখলে সফল হওয়া যায়।
* বর্তমান স্যারদের গোরাবাবু, আশীষ বাবু ছাড়া আমি চিনিনা আর কাউকে। কিন্তু দর্শক আসনে বসে দেখলাম স্যার ম্যাডামদের। খুব ভালো লাগলো আপনাদের। ভালো থাকুন আপনারা।
আমাদের সবার স্কুল যেন এক পরিবার আমরা।
প্রথাগত গানের চর্চা না করেও সাহস করে চেষ্টা করে মন থেকে কিছু করলে ভালো হবে। আমাদের মত ভীতু ছাত্রদের জন্য আপনারা বার্তা দিয়ে গেলেন
গোরাবাবু আর একজন স্যার গান গাইলেন (নাম মনে নেই 🙏)
** আর স্কুলের বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের অনুষ্ঠান মুগ্ধ করলো। ওদের পাশে যে স্যার ম্যাডাম রা ছিলেন তাদের কেও 🙏
*** আর ছাত্র ছাত্রী দের তৈরি মডেল গুলো কথা না বললে বাকি থেকে যায়। ওদের যে ম্যাডাম গাইড করেছেন আপনাকেও প্রণাম দি 🙏
যে স্যারেরা অনুষ্ঠান পরিচালনা করলেন 🙏
আমার পড়ে আসা স্কুল আজ আরো ঝাঁ চকচকে হয়েছে। বপুতে বেড়েছে। সময় উপযোগী পড়াশোনার পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো ভালো হবে।
পড়াশোনা, খেলাধুলা, সুস্থ্য সংস্কৃতি চৰ্চা, সব দিক দিয়ে আরো এগিয়ে যাবে এমন শিক্ষক কুল যাদের পাশে আছেন এটা বলার অবকাশ রাখে না।
উদ্যোক্তা প্রাক্তনী দাদা, দিদি,বন্ধু, বোন ভাইদের আমার প্রনাম শ্রদ্ধা ভালোবাসা। স্বর্গীয় শুভদ্বীপ ভারতী দাদার প্রতিও শ্রদ্ধাঞ্জলি 🙏
আর সব শেষে প্রধান শিক্ষক শ্রদ্ধেয় সঞ্জয়বাবু স্যারকে প্রনাম। এতো বড় একটা সফল অনুষ্ঠান আমাদের সবাইকে উপহার দেবার জন্য।
ভালো থাকবেন স্যার।
আপনার বিদ্যালয়ের সব কচিকাঁচা দের নিয়ে
‘আমি তোমাদেরই লোক ‘ হয়ে 🙏
বাবা তারকনাথের আশীর্বাদে আমাদের তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের গরিমা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক এই প্রার্থনা করি 🙏
🙏🙏🙏🙏
✍️ সুকন্যা নন্দী
(১৯৯৮)
তারকেশ্বর উচ্চবিদ্যালয় শতবর্ষে
–মধুমিতা দেবনাথ
তারকেশ্বর উচ্চবিদ্যালয় সাধারণত বয়েজ স্কুল নামে পরিচিত,,, আমরা মানে মেয়েরা দুবছর পড়েছি,,,, তবুও এই স্কুল আমাদের কাছে একটা আবেগ একটা গর্বের জায়গা,,,, আমি আমার বোন স্থানীয় শুভ্রা চক্রবর্তীর ডাকে সাড়া পেয়ে আর আমার শ্রদ্ধেয় দাদা সৌমেন জানার ডাকে আমি শতবর্ষের একটি মিটিং এ অংশ গ্রহণ করেছিলাম,,,, আমি এখানে না থাকার কারনে অনেক কিছুই জানতাম না শুভ্রা, সৌমেন দা আমাকে জানিয়ে ছিল,,, তারপর নানা কারনে আমি অনেক কিছু তেই উপস্থিত হতে পারিনি,,,, ৩ তারিখ থেকে অংশগ্রহণ করেছি যথেষ্ট সম্মান ও ভালোবাসা পেয়েছি স্যার ম্যাডাম দের কাছে,,,, স্যারেরা যে আমাদের নাম ভোলেনি এটাই অনেক বড়ো পাওয়া,,, রেনুপদ বাবু, দেব বাবু, সুভাষ বাবু আরও অনেক স্যারেদের সাথে দেখা হলো ওনাদের পা স্পর্শ করতে পেরে আমি যথেষ্ট গর্বিত,,,,, আমার ব্যাচের কেউই আসেনি কিছুটা বড়ো দাদা, দিদিরা আর বয়েসে ছোট বোন ভাইদের সাথে এই কটা দিন মহানন্দে কেটেছে,,, সকলের ভালোবাসায় আমি আপ্লুত,,,,,,কার নাম নিতে গিয়ে কার নাম বাদ পড়বে তাই কারো নাম নিচ্ছি না সকল দাদা/দিদি, ভাই বোন দের সাথে দেখা হয়ে তাদের ভালোবাসা পেয়ে আমি সত্যি ধন্য,,,, সবথেকে বড়ো পাওনা ছোটো বেলায় একই পাড়ায় বড়ো হওয়া পিনাকি দা খুব কাছের মানুষ ছিল দাদার সাথে কাল দেখা হয়ে মনে হল জীবনে একটি পরম প্রাপ্তি হলো,,,, তাই স্মৃতি হিসাবে একটা ছবি তুলে নিতে ভুল করলাম না,,,,, আমার সমস্ত শ্রদ্ধেয় স্যার ম্যাডাম দের জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম🙏🙏🙏আমার দাদা দিদিদের জানাই প্রণাম 🙏🙏🙏আমার ভাই বোনেদের জানাই মনের অন্তঃস্থল থেকে ভালোবাসা,,,, এই চারটে দিন আমার মনের মনিকোঠায় চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে।❤️❤️❤️