আমাদের সবার আবেগের ‘হাই স্কুল’ তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎযাপনের সাক্ষী হতে পেরেছি এ পরম প্রাপ্তি আর সকলের মত আমারও।
আমাদের সবার আবেগের ‘হাই স্কুল’ তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎযাপনের সাক্ষী হতে পেরেছি এ পরম প্রাপ্তি আর সকলের মত আমারও।
এতো বড় অনুষ্ঠানের কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারিনি আমি । একটা পুজোর প্রস্তুতি নিতে না জানি কত আলোচনা থাকে , পরিকল্পনা তৈরি হয়, অর্থনৈতিক দিক টা মোটামুটি নিশ্চিত করা হয়। অবশেষে খুঁটি পুজো করে শুরু হয় প্যান্ডেলের কাজ।
আমাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০০ বছরের ‘ বিদ্যালয়ের পুজো ‘ ক্ষেত্রে এগুলো সব টা যে হয়েছে এটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি আমার। একদম কোনো দায়িত্ব পালন না করেও শুধু প্রাক্তনী হিসেবে পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই দৈবাত আমাদের শিশুবেলা থেকে খেলে বড় হওয়া স্কুল মাঠে ঢুকে পরে একটা চেয়ার টেনে বসে পরা । অবশ্যই শ্রদ্ধেয় শিব বাবুর মূর্তিকে প্রণাম করে। কোনো এক সকালে আমাদের দু’বোনকে বাবার নিকট বন্ধু ‘শিবু’ (শ্রদ্ধেয় শিবপ্রসাদধাড়া ) স্যারের কোচিং ক্লাসে দিয়ে আসা।
ওই মাঠেই ‘মুক্তিসংঘে’ র উদ্যোগে ব্রতচারী, ব্যান্ডপাটি আরো কত অনুষ্ঠান খেলা। সকাল বিকেল কেটেছে বন্ধুদের নিয়ে।
মাঠটা বোধহয় চিনতে পেরেছিল আমাকে , ভীষণ আপন করে এগিয়ে দিল সামনে। আর কুন্ঠা হলোনা।
আমাদের ব্যাচের কোনো বন্ধু নেই। পড়েছি ২ বছর এমন ঠাট্টাও শুনতে হয়েছে 😅
এতো বছর পরে হয়তো নানা অজানা ভাবনা তৈরি হয়েছিল, সবটা সরে গেল নিমেষে। একটা চেয়ার টেনে একাই বসে পড়লাম এই প্রথমবার বোধহয় কোনো বন্ধু ছাড়া। কখনো বন্ধু হলো ক্ষেপা মামা, কখনো ইমন রা, কখনো সুকৃতি দিদি,শৈবাল কে। পরে চন্দ্রনাথ দাদা। থেকে গেলাম পুরো সময় খাওয়া দাওয়া ভুলে শুধু আবেগ ভালোবাসা থেকে। ডেকে নিলাম আমার বৌদি কে এই স্কুলের প্রাক্তনী ও। একেবারে ছৌ নাচ দেখে ভীষণ আনন্দ নিয়ে বাড়ি এলাম।
পরের দিন নিজের কাজের জায়গা থেকে ট্রেন থেকে নেমে চলে গেলাম আমাদের স্কুলের অনুষ্ঠানে। এবার পেয়ে গেলাম কিছু দিদিকে যাদের স্নেহ বরাবর পাই স্কুলের দিন থেকে। রুমেলী দি, প্রিয়াদি, সোমাদি, মৌটুসী দি, মধুমিতা দি (বাবুসোনা দি ), পূর্ণিমা আর পেলাম দাদা দের অলোকেন্দু দা, সৌমেন দা, পুকাই দা, বাবুদা, মোটা দা, সবার স্নেহ আপ্লুত করলো। পরে মিলন, সুরজিৎ কোলে, কৌশিক,অতনু, সুশীল, বোন কণিকা, বন্ধু মৌসুমী,সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমরা কিছুক্ষনের জন্য হলেও এক হলাম।
শ্রদ্ধেয় স্বপন ভারতী বাবুর লেখার বাকিটা জানার আগ্রহ টেনে নিয়ে গেল আমাকেও। চললাম রুমেলী দির সঙ্গে আমিও স্যার নিয়ে গেলেন আজকের স্টাফ রুমের সামনে। কথা হলো, খোঁজ খবর পরিচয় জেনে শ্রদ্ধেয় দিলীপ বাবু স্যার সঙ্গে তাঁর লেখা পড়ে শোনালেন আমাদের। মুগ্ধ হলাম। স্যারের লেখার শেষের দুটো লাইন যে আমাদের সবার কথা। রেনুপদ বাবুর স্নেহ পাই আজও। স্কুলের মধ্যে স্যার কে পেয়ে আরো ভালো লাগলো। খুব মনে পড়লো সংস্কৃতের বিনয় বাবু কে। যিনি চাকরী জীবন থেকে অবসর নেবার পরেও টিফিনের পরের সপ্তাহে দুদিন ক্লাস নিতে আসতেন। তারক বাবু, ভদ্রেশ্বর বাবু, অচিন্ত্য বাবু, দীপেনবাবু, কার্ত্তিক বাবু, তাপস বাবু, মদন বাবু, গোরা বাবু, অশোক বাবু, হিমাশু বাবু, রামবাবু, লাইব্রেরি র তপন বাবু, সাদা লালপাড় শাড়ি পড়ে আমরা প্রার্থনার লাইনে। সামনে দিবাকর বাবু রা। ইরা দিদিমনি ছিলেন। নাম ভুল হলে ক্ষমা করবেন 🙏 বন্ধুদের মুখ থেকে শোনা।
আর পেয়েছি শ্যামাদা, মথুরদা কে। খুব মনে পড়ে ভেঙে পরা স্কুলের সামনে টা আজ যেটা প্রবেশপথ।
সব স্যারের নাম বলতে পারলাম না। সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আভূমি প্রনাম। যাঁরা আছেন সুস্থ্য থাকুন ভালো থাকুন।
স্মৃতিচারণ তো অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে এবার সুতো গোটানোই ভালো।
অনেক দিন পরে প্রিয় লোপামুদ্রা মিত্রর গান মুগ্ধ হয়ে শুনলাম।
* কত গুণী কৃতি মানুষের সানিধ্যে এলাম।
প্রাক্তনী দাদাদের নাটক দেখে মন ভরে গেল।
বাকি প্রাক্তনী দের সব অনুষ্ঠান দেখে আপ্লুত হয়েছি।
সোমনাথ, এমিলি, অর্কদের গান, কৃষ্ণদাসের বাঁশি, আর সবার কবিতা।
** সব বয়সের প্রাক্তনী রা শিখিয়ে গেলেন জীবনে প্রথম, দ্বিতীয় না হয়েও একটা লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে স্বপ্ন দেখলে সফল হওয়া যায়।
*** বর্তমান স্যারদের গোরাবাবু, আশীষ বাবু ছাড়া আমি চিনিনা আর কাউকে। কিন্তু দর্শক আসনে বসে দেখলাম স্যার ম্যাডামদের। খুব ভালো লাগলো আপনাদের। ভালো থাকুন আপনারা।
আমাদের সবার স্কুল যেন এক পরিবার আমরা।
প্রথাগত গানের চর্চা না করেও সাহস করে চেষ্টা করে মন থেকে কিছু করলে ভালো হবে। আমাদের মত ভীতু ছাত্রদের জন্য আপনারা বার্তা দিয়ে গেলেন
গোরাবাবু আর একজন স্যার গান গাইলেন (নাম মনে নেই 🙏)
**** আর স্কুলের বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের অনুষ্ঠান মুগ্ধ করলো। ওদের পাশে যে স্যার ম্যাডাম রা ছিলেন তাদের কেও 🙏
***** আর ছাত্র ছাত্রী দের তৈরি মডেল গুলো কথা না বললে বাকি থেকে যায়। ওদের যে ম্যাডাম গাইড করেছেন আপনাকেও প্রণাম দি 🙏
যে স্যারেরা অনুষ্ঠান পরিচালনা করলেন 🙏
আমার পড়ে আসা স্কুল আজ আরো ঝাঁ চকচকে হয়েছে। বপুতে বেড়েছে। সময় উপযোগী পড়াশোনার পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো ভালো হবে।
পড়াশোনা, খেলাধুলা, সুস্থ্য সংস্কৃতি চৰ্চা, সব দিক দিয়ে আরো এগিয়ে যাবে এমন শিক্ষক কুল যাদের পাশে আছেন এটা বলার অবকাশ রাখে না।
উদ্যোক্তা প্রাক্তনী দাদা, দিদি,বন্ধু, বোন ভাইদের আমার প্রনাম শ্রদ্ধা ভালোবাসা। স্বর্গীয় শুভদ্বীপ ভারতী দাদার প্রতিও শ্রদ্ধাঞ্জলি 🙏
আর সব শেষে প্রধান শিক্ষক শ্রদ্ধেয় সঞ্জয়বাবু স্যারকে প্রনাম। এতো বড় একটা সফল অনুষ্ঠান আমাদের সবাইকে উপহার দেবার জন্য।
ভালো থাকবেন স্যার।
আপনার বিদ্যালয়ের সব কচিকাঁচা দের নিয়ে
‘আমি তোমাদেরই লোক ‘ হয়ে 🙏
বাবা তারকনাথের আশীর্বাদে আমাদের তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের গরিমা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক এই প্রার্থনা করি 🙏
🙏🙏🙏🙏
✍️ সুকন্যা নন্দী
(১৯৯৮)
———————–
(Feed generated with FetchRSS)